মহাস্থানগড়


মহাস্থানগড় (Mahasthangarh) বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। প্রাচীন পুন্ড্রনগরীতে প্রায় ৪০০০ বছর পুরাতন স্থাপনা রয়েছে। মাউর‌্যা এবং গুপ্ত রাজারা মহাস্থানগড়কে প্রাদেশিক রাজধানী হিসাবে ব্যবহার করতেন। পরবর্তীতে পাল রাজা পুন্ড্রনগর বা মহাস্থানগরকে মূল রাজধানী হিসাবে ব্যবহার করেন। প্রাচীন পুন্ড্রনগরীর ধংসস্তুপ দেখতে চাইলে যেতে হবে বগুড়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর পশ্চিমপ্রান্তে।

রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, মালদাহ, রাজশাহী অর্থাৎ বরেন্দ্র অঞ্চল পুন্ড্রদের আদি বসবাসের স্থান।ইতিহাস থেকে জানা যায়, ৬৯৩ সালে বিখ্যাত চীনা ভ্রমনকারী ওয়ান চুন বৌদ্ধ স্থাপনা পরিদর্শনের জন্যে পুন্ড্রনগর তথা মহাস্থানগড় আসেন। তাঁর বর্ণনা মতে, তৎকালীন সময়ে ছয় মাইল আয়তনের পুন্ড্রনগরী একটি সমৃদ্ধ জনপদ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল, যা অনেকটা ব্যবলিওন, এথেন্স, মিশরের কাঠামোর মত। মুসলিম শাসনামলে ধীরে ধিরে পুন্ড্রনগরী মহাস্থানগড়ে পরিণত হয়।

১৮০৮ সালে “বুচানন হামিল্টন” সর্বপ্রথম মহাস্থানগড়ের ধ্বংসাবশেষ আবিস্কার করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৩১ সালে মহাস্থানগড়কে প্রাচীন পুন্ড্রনগরী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

মহাস্থানগড়ের দর্শণীয় স্থানসমূহ
সমস্ত মহাস্থানগড়ে রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এদের মধ্যে রয়েছে বৈরাগীর ভিটায় দুটি মন্দিরের অবশিষ্টাংশ, খোদারাপাথার ভিটা, কালীদহ সাগর ও পদ্মাদেবীর বাসভবন, শীলাদেবীর ঘাট, জিউৎকুন্ড কুপ, মানকালির দ্বীপে ১৫ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদের অবশিষ্টাংশ, গোবিন্দ ভিটা, তোতারাম পণ্ডিতের ধাপ এবং গোকুল মেধ, যা বেহুলার বাসর ঘর অথবা লক্ষিন্দরের মেধ নামে পরিচিত।

এছাড়া আরও যা যা দেখতে পারেন ইস্কান্দারের ধাপ, খুল্লানার ধাপ, মাহী সওয়ার মাজার শরীফ, ভীমের জঙ্গল, জগির ভবন, অররা, তেঘর, রোজাকপুর, মাথুরা, মহাস্থানগড় জাদুঘর এবং পরশুরামের প্রাসাদ।

কিভাবে যাবেন
বাসে ঢাকা থেকে বগুড়া
রাজধানী ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, শ্যামলী, আবদুল্লাহপুর, কল্যাণপুর থেকে বগুড়া যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। বগুড়াগামী বাস সার্ভিসের মধ্যে শ্যামলী পরিবহন (02-900331, 8034275), এস আর ট্রাভেলস (8013793, 8019312), 01711-394801), হানিফ এন্টারপ্রাইজ (01713-402671, 01713-402631), একতা পরিবহন (01712-287730), বাবুল এন্টারপ্রাইজ, এস এ পরিবহন (01916-712614, 01915-375887), শাহ ফতেহ আলী পরিবহন উল্লেখযোগ্য।

ট্রেনে ঢাকা থেকে বগুড়া 
ঢাকা থেকে লালমনি এবং রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন বগুড়া হয়ে যাতায়াত করে তাই এই ট্রেনগুলোতে চড়ে বগুড়া যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন প্রতিদিন সকাল ৯ টায় যাত্রা করে এবং লালমনি এক্সপ্রেস যাত্রা করে রাত ১০ টা ১০ মিনিটে। রংপুর এবং লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন যথাক্রমে রবিবার এবং শুক্রবার বন্ধ থাকে।

বগুড়া শহর থেকে সিএনজি অথবা অটোরিকশা দিয়ে সহজেই মহাস্থানগড় যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন
বগুড়ায় রাত্রি যাপনের জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল ও মোটেল রয়েছে। ভাল মানের হোটেলের মধ্যে পর্যটন মোটেল, নাজ গার্ডেন, নর্থওয়ে মোটেল, সেফওয়ে মোটেল, মোটেল ক্যাসল এমএইচ, সেঞ্চুরি মোটেল, হোটেল সিস্তা, হোটেল আকবরিয়া, রেডচিলিস চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট এন্ড আবাসিক হোটেল উল্লেখযোগ্য।

সাধারণ মানের হোটেলের মধ্যে হোটেল আল আমিন, হোটেল রয়াল প্যালেস, হোটেল সান ভিউ, হোটেল রাজমনি, হোটেল হানি ডে, হোটেল আজিজ উল্লেখ্য।

বুকিং দিতে যোগাযোগ করতে পারেন

নাজ গার্ডেন: ফোন-051-62468, 051-63272, 051-64197, 051-66655, 051-78088 মোবাইল: 01913-801122, 01913-801114 ইমেইল: info@hotelnazgarden.com ওয়েবসাইট: www.hotelnazgarden.com

হোটেল সিস্তা: 051-66965, 051-66310, 051-66275, 051-66868, 051-66441 ওয়েবসাইট: www.hotelsiestabd.com

সেফওয়ে মোটেল: 051-62690, 051-66087 ই-মেইল: safewaymotelbogra@hotmail.com

নর্থওয়ে মোটেল: 051-67109, 051-66824, 051-66087

পর্যটন মোটেল: 051-67024 থেকে 27 পর্যন্ত, মোবাইল: 01746100200


  • রেডচিলিস চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট এন্ড আবাসিক হোটেল: 051-69777

Comments

Popular posts from this blog

World General Knowledge

Qoutes and Status

ocean